নড়াইলে ১২ ঘন্টার ব্যবধানে কালিয়া ও নড়াইল শহরে দু’জন খুন হয়েছেন। এ সময় ৩০ জন আহত হয়েছেন এবং ১৫ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও অর্ধশতাধিক বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ফরিদ মোল্যা (৫৭) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়।
হত্যা পরবর্তীতে প্রতিপক্ষের ১৫ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও অর্ধশতাধিক বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে । ওই রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথ অভিযানে সংঘর্ষের সাথে জড়িত স্থানীয় উভয় পক্ষের ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এসময় বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন – আমিরুল ইসলাম, আতিকুর রহমান, হাচিবুর রহমান, মোরসালিন, হাসেম মোল্যা, মনি মিয়া, মুজাহিদুল, সিরাজ মোল্যা , দিকু শেখ, জাফর মোল্যা, শাহাদাত হোসেন, মুন্নু শেখ, শাহাজান, ইউসুফ, নয়ন মোল্যা, আব্দুল মান্নান, জমির মল্লিক, দিদার মোল্যা, মনিরুল ইসলাম এবং আমিরন হোসাইন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চনপুর গ্রামের মিলন মোল্যা ও আফতাব মোল্যা পক্ষের মধ্যে অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে মিলন মোল্যার পক্ষের সানোয়ার মোল্যাকে আফতাব মোল্যার লোকজন মারপিট করে। এর জের ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। আহতদের চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফরিদ মোল্যা নামে একজন নিহত হন। নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে আফতাব গ্রুপের লোকজন রাতেই বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পিকুল, কাক্কা মিয়া, সাহেব মোল্যা, বুলু ফকির, খালিদ শেখ, রঙ্গু শেখ, শামরুল মল্লিক, আকার মল্লিক, মোস্তাক মোল্যা, শহিদ শেখসহ ১৫ টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও অর্ধশতাধিক বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুর চালায়।
এ বিষয়ে কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ফরিদ মোল্যার মৃত্যুর ঘটনায় তাৎক্ষনিকভাবে কয়েকটি বাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটলেও নতুন করে যাতে প্রতিপেক্ষর বাড়ি ভাংচুরসহ সহিংসতা যাতে না ঘটে সে চেষ্টা করছি। রাতে বিশৃংখলার অভিযোগে অভিযানে চালিয়ে ২০ জনকে দেশীয় অস্ত্র সহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে।
এদিকে শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে নড়াইলের নতুন বাস টার্মিনালে মোশারফ মুন্সি মুসাকে (৪৫) নামে এক ড্রাইভারকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
নিহত মুসা সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নের দলজিৎপুর এলাকার শামসুর রহমান মুন্সীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ৬ টার দিকে গাড়ির ড্রাইভার মুসা নতুন বাস টার্মিনালে বসে ছিলেন। এ সময় কয়েক দুর্বৃত্ত এসে তাকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ওসি মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, নতুন বাস টার্মিনালে অফিসের মধ্যে একজনকে ছুরিকাঘাতে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, স্থানীয়রা আমাদের এ ঘটনার খবর দিয়েছে পৌনে ৯টার দিকে। কি কারণে তাকে মারা হয়েছে তা জানা যায়নি। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে মর্গে নেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে